তাজমুল করিম, হাওড়াঃ- অাজকালকার মিডিয়ার যা অবস্থা, সেদিন খুব বেশী দূরে নেই যেদিন ইসলাম ফোবিয়াতে অাক্রান্ত অামাদের দেশের মিডিয়াগুলো ফেসবুকে লিখবে, দেখে নিন যে কাজটি অাজ থেকে মুসলিমরা অার করতে পারবে না। জানতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে। তারপর যখন অামরা লিঙ্কে ক্লিক করবো দেখা যাবে সেখানে লেখা হয়ছে, দারুল উলুম দেওবন্দ ফতোয়া জারি করেছে যে অাজ থেকে মুসলিমরা অার পশ্চিম দিকে মুখ করে মূত্র ত্যাগ করতে পারবে না। অার তারপর এ্যন্টি ইসলামিক সেকুলার নামক জন্তুগুলো স্ট্যাটাস মারাবে এই বলে যে ধর্ম নিরপেক্ষ ভারতে এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। অার এইসব জন্তুদের বিকৃত বীর্যে নিজ যোনি সিক্ত করিয়া মুসলমান নামধারী কিছু কৃত্রিম নারীবাদী মহিলারা অামির খানের সিক্রেট সুপারস্টার দেখিয়া স্ট্যাটাস মারাইবেন যে শুধু বোরখা খুলে হাতে গিটার নিলেই হবে না বরং তার সাথে দেওবন্দের ফতোয়ার জবাব দিতে হবে। তা কিভাবে দিতে হবে! যেহেতু দেওবন্দ বলেছে পশ্চিম দিকে মুখ করে মূত্র ত্যাগ করা উচিত নয় তাই মেয়েদের শুধু পশ্চিম দিকে মুখ করে নয়, তার সাথে সাথে পুরুষের মত রাস্তায় দাঁড়িয়ে মূত্রত্যাগ করতে হবে। এমন কি গোটা পাঁচেক মুসলিম মেয়েও জোগার করা হবে মামলা করার জন্য। তারা পিটিসনে লিখবে যে তারা মূত্র ত্যাগকে কেন্দ্র করে কিভাবে স্বামীদের দ্বারা র্নিযাতিত। কারণ তাদের স্বামীরা তাদের দাড়িয়ে মূত্র ত্যাগ করতে দেয়না। অতপর মামলা শেষে অাদালত রায় দেবে অাজ থেকে দাঁড়িয়ে মোতা নিষিদ্ধ নয়। কারন হাদীসে পাওয়া গেছে কোন একটা দিন নবী (সা) বসার সুযোগ না থাকায় দাঁড়িয়ে মূত্র ত্যাগ করে ছিলেন। তাই এই রায় ইসলামকে মেনেই দেওয়া হয়েছে। অতঃপর এ্যন্টি ইসলামিক সেকু নামক প্রানীগুলো মানবতার জয় বলে স্ট্যাটাস মারাবে। এটা পড়ে হয়তো অাপনার হাসছেন। কিন্তু এটা ঘটলে অামি এতটুকুও অবাক হবো না। সত্যি বলতে ইদানিং নিউজগুলো মুতের থেকেও খারাপ। অারে ভাই কে ফেসবুকে ছবি দেবে কে দেবে না, কে বোরকা পরবে কে পরবে না, কে সিনেমা করবে কে করবে না এ বিষয়ে কোন ফতোয়া কাজ করে না। ফতোয়া যদি কাজ করতো তাহলে সালমান, সাহরুখ, অামীর, সাইফ অালি, ইরফানরা বলিউডের প্রথম সারিতে থাকতেন না। ফতোয়া কাজ করলে অাতিফ অাসলাম, মহম্মদ ইরফান, রাহাত ফাতেহ অালি খানদের সঙ্গীত জগতের প্রথম সারিতে দেখা যেতো না। ইসলাম কোন ক্ষেত্রেই জোরজবরদস্তির পক্ষে নয়। স্ক্রীনে যুবতী নায়িকাদের সাথে চুম্বন, মাখামাখির পরেও অাজ পর্যন্ত কোন ইসলামী স্কলার, বা মাওলনা, হাফেজ কেউ শাহরুক খানদের মারার হুমকি দিয়েছে কি? বরং উল্টে মুসলমানরা টিপুসুলতান মসজিদের ইমাম বরকতীকে ক্যালানি দিয়ে তাদের স্ট্যান্ড লেভেল দেখিয়ে দিয়েছে।
কোন ফতোয়ার মাধ্যমে সানিয়া মির্জার মিনি স্কাট পরে খেলা বন্ধ হয়ে যায়নি। বরং সানিয়া কে কেন্দ্র করে জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হয়েছে যে জাকির নায়েক নাকি সানিয়ার খেলার বিরোধিতা করেছেন। কিন্তু বাস্তবে জাকির নায়েকের ভিডিও ক্লিপ টা দেখলে বোঝা যাবে যে, জাকির নায়েক সানিয়া মির্জার প্রশংসা করে বলেছেন যে সানিয়া মির্জা সেই সব মুসলিমদের থেকে ভাল যারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ অাদায় করেন না। কারণ সানিয়া নামাজ অাদায় করেন। তিনি অারও বলেছেন যে অাগে যারা টেনিস খেলতো তাদের সমগ্র দেহ অাবৃত থাকতো। তাই টেনিসের জন্য ছোট স্কাটের প্রয়েজেনীয়তা নেই। অার দেহের অার্কষনীয় অঙ্গ দেখানো ইসলাম অনুমোদন করে না। কেন করে না সেটা ভিন্ন বিষয়। তিনি যাস্ট তাঁর মতামতটা দিয়েছেন। সানিয়াকে খেলা বন্ধ করতে বলেন নি। অার তার কথায় সানিয়া খেলা বন্ধও করেননি। কারন তিনি সানিয়ার খেলার নয় পোষাকের সমালোচনা করেছেন। অথচ এগুলো নিয়ে মিডিয়ার কত অপপ্রচার। অার যারা সানিয়ার বা সারাপোভাদের মিনি স্কাট পরার পক্ষে,অামি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি তারা সানিয়াদের খেলায় যত না মনোযোগ দেন তার থেকেও বেশী মনোযোগ থাকে সানিয়ার নিতম্ভের কাপড়টা কখন একটু উঠবে। মিনি স্কাট পরলে সানিয়া মির্জা ব্রান্ড এম্বাসাডর, অার যেই একটা পাকিস্তানী ছেলেকে বিয়ে করল, সঙ্গে সঙ্গে নেঙটি সমর্থকদের ধর্মনিরপেক্ষতা পেছনে ঢুকে গেল। সানিয়া দেশদ্রোহী হয়ে গেল।
ইসলামের নিজস্ব একটা স্ট্যান্ড রয়েছে। প্রতিটা স্ট্যান্ডের যথেষ্ট যুক্তি রয়েছে। তবে সেগুলো কেউ মানতে বাধ্য নন। অার ইসলামের এই নিয়মকানুন কেউ যদি বিনাযুক্তিতেও মেনে চলে তাহলে তারও সুফল সে পাবেই। তার উদাহরণ অামি দিচ্ছি। একটি রিসেন্ট ঘটনা অামাদের গ্রামের। নজরুল নামের এক যুবক একটি ছেলেকে তার কাজের দেখাশোনার জন্য নিয়োগ করে। সেই সূত্রে ঘরে অাসা যাওয়া। তার পর কাজের অজুহাতে বাড়িতে অাসা। স্বামীর অবর্তমানেও অাসা যাওয়া শুরু। তারপর পরকীয়া। এখন মেয়েটা অার ঘর করতে চাইছে না। অথচ ইসলাম পরনারী বা পরপুরুষের সাথে অবাধ মেলামেশা নিষিদ্ধ করেছে। বিনাপ্রয়োজনে অযথা বাক্যালাপ নিষিদ্ধ করেছে। বাড়ির অন্দরমহলে পরপুরুষদের অযথা অাগমন বৈধ নয়। কিন্তু সেব্যাপারে অসতর্কতার কারনে অাজ নজরুল বউ হারাতে চলেছে। এ ভোগান্তি শুধু নজরুলের নয়, বরং নজরুলের বাচ্চা মেয়েটাও ভোগ করছে। নজরুল মেয়েকে কাছে পায় না। তাই মেয়ে যেখানে টিউসন পড়ে সেখানে গিয়ে সে রোজ দেখা করে। এ ঘটনা নতুন নয়। অহরহ দেখা যাচ্ছে সমাজে। অাজ কত অপরিচিত পুরুষ দাদা, ভাই, কাকা সেজে অামাদের বাড়ির অন্দরমহলে। অার এর ফল সরূপ পাতানো দাদা কিংবা কাকার কাছে ধর্ষিত হওয়া খুব সাধারন বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু সামান্য সতর্কতা অবলম্বন করলে এসব সমস্যা এড়িয়ে যাওয়া যায়। ইসলামের এই সামান্য উপদেশ মেনে নিলে অসামান্য উপকৃত হবে হাজার হাজার পরিবার। বেঁচে যাবে শত সংসার। ইসলামের এ উপদেশের কোন বিকল্প নেই এটা চ্যলেঞ্জের সাথে বলা যেতে পারে। তবে এটা মানতে কেউ বাধ্য নন। তেমনই কারও বউ পালালে কিংবা পরপুরুষের সাথে শয়ন করলে থানায় ডাইরি করা ছাড়া কারও কিছু করার নেই।
অাজকাল ফেসবুকে মেয়েদের ছবি নিয়ে কি কান্ড ঘটছে তা অামরা দেখতে পাচ্ছি। ছবিকে ফটোশপ করে অর্ধ উলঙ্গ করে দেওয়া হচ্ছে। তারপর ব্ল্যাকমেইল শুরু। প্রেমের নামে নানা ভাবে প্রতারিত করা হচ্ছে। কোন মেয়ে ধর্ষিতা হলে কিংবা খুন হলে কিংবা ব্ল্যাকমেইলিংয়ের কারনে অাত্মহত্যা করলে অামরা বড়জোর পুলিশ কেস করতে পারি। কিন্তু অামরা তার হারিয়ে যাওয়া সতীত্ব ফিরিয়ে দিতে পারবো না। তার জীবন ফিরিয়ে দিতে পারবো না। অার এমতাবস্থায় যদি দেওবন্দ উপদেশ দিয়ে থাকে মহিলাদের ছবি অাপলোড না করতে তাহলে তা যুগের উত্তম সতর্ক বার্তা। এটাকে ভন্ড সেকুরা যতই কনজারভেটিভ অাখ্যায়িত করুক, এ কনজারভেটিভ হওয়ার কারনে যদি একটি মেয়েরও জীবন, সতীত্ব রক্ষা পায় তবে সেটাই ভাল। এটাতো সবার প্রতি দেওয়া কোন নির্দেশ নয়। কারও জানতে চাওয়া প্রশ্নের উত্তর মাত্র। এটা তো কেউ মানতে বাধ্যও নন। তথাপি কেউ যদি কল্যানকর জ্ঞানে ইহা মেনে চলে তাতে অাপনাদের এত অাপত্তি কিসের?