সুভাষ চন্দ্র দাশ, ক্যানিংঃ- ১০ ডিসেম্বর পৃথিবী বিখ্যাত মহান ব্যাক্তি অালফ্রেড নোবেল এর মৃত্যু দিবস। যাঁর জন্য এই পৃথিবীতে নোবেল পুরষ্কারের প্রচলন। পৃথিবীর বৃহত্তম পুরষ্কার “নোবেল” তাঁরই নামে। উল্লেখ্য এই পৃথিবী নোবেলের থেকে সম্মানজনক পুরষ্কার আর একটি ও নেই। তাই প্রতি বছর সারা বিশ্ব অধীর আগ্রহে তাকিয়ে থাকে এবার কে পাচ্ছেন নোবেল?কিসের জন্য?
১৮৩৩ সালে ২১ অক্টোবর সুইডেনের ষ্টকহোমে জন্মগ্রহন করেন অালফ্রেড নোবেল। জীবনে পড়াশোনা এবং কাজের জন্য নানান দেশে ঘুরে বেড়িয়েছেন। তিনি ছিলেন বিখ্যাত বৈঞ্জানিক,ইঞ্জিনিয়ার,ব্যবসায়ী,কেমিষ্ট ও বিখ্যাত দার্শনিক। আলফ্রেড নোবেলের বাবা ইমানুয়েল নোবেল ছিলেন একজন বিখ্যাত ইঞ্জিনিয়ার। আট ভাই বোনের মধ্যে আলফ্রেড নোবেল ছিলেন চতুর্থ। পরে ষ্টকহোম থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গে চলে যান নোবেল পরিবার। সেখানেই ইমানুয়েল নোবেল মেশিন ও বিষ্ফোরক পদার্থের ব্যবসা শুরু করেন। বিষ্ফোরক পদার্থ নিয়ে ছোট বেলা থেকেই পরীক্ষা করতে ভালোবাসতেন আলফ্রেড। ১৮৬৪ সালে অালফ্রেডের বয়স যখন ২৯ সেই সময় তাঁদের কারখানায় মারাত্মক বিষ্ফোরণ ঘটে। বিষ্ফোরণে মারা যান ৫ জন। বিষ্ফোরণে মৃতের তালিকায় ছিলেন অালফ্রেডের ভাই!!এতবড় দুর্ঘটনার পরও বিষ্ফোরক নিয়ে পরীক্ষা চালিয়ে গেছেন আলফ্রেড। অবশেষে তৈরী করে ফেললেন “নোবেলস্ সেফটি পাউডার” পরে অবশ্য নাম পরিবর্তন করে নাম করণ করেন “ডিনামাইট” । এরপর আরো ৩৫০ পেটেন্ট নিজের নামে করেন আলফ্রেড নোবেল!!তারপর বিষ্ফোরক বিক্রি করে প্রচুর টাকা উপার্জন করেছিলেন। সধারন লোকে তাঁকে মৃত্যুর ব্যবসায়ী বলে জানতেন এবং চিনতেন।

১৮৮৮সালে ফ্রান্সে থাকা কালীন আলফ্রেডের আর এক ভাইয়ের মৃত্যু হয়। সংবাদ পত্রে ভাইয়ের মৃত্যুর পরিবর্তে ভুলকরে আলফ্রেডের মৃত্যু সংবাদ পরিবেশিত হয়। আর সংবাদ পত্রের হেডলাইন ছিল “মারা গেলেন “মৃত্যুর ব্যবসায়ী” !!সংবাদ দেখে আলফ্রেড নোবেলের চোখ দিয়ে নেমে আসে একরাশ অশ্রু। পরে চিন্তাভাবনা করে ঠিক করলেন একটু অন্যরকম করতে হবে। তাই তিনি নিজের ২৫০ মিলিয়ন আমেরিকান ডলার রেখে যান নোবেল পুরষ্কারের জন্য। তিনি মারা যান ১৮৯৬ সালের ১০ ডিসেম্বর। মৃত্যুর পাঁচ বছর পর ১৯০১ সালে শুরু হয় নোবেল পুরষ্কার প্রচলন। যা আজ অবধি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ এবং বৃহৎ পুরষ্কার।
আজ মহানতম ব্যাক্তিত্ব আলফ্রেড নোবেলের ১২১ তম মহাপ্রয়াণ দিবসে জানাই শ্রদ্ধার্ঘ।